গুপ্ত রাজনীতির কবলে ছাত্রদল
ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রদল কর্তৃক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধের দাবিতে হঠাৎ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়েছে ক্যাম্পাস।
বুধবার (৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা হলের সামনে অবস্থান করে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে জিয়াউর রহমান হল, শেখ মুজিবুর রহমান হল, জসীম উদ্দীন হল, সূর্যসেন হল, মুহসীন হলসহ অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরাও সেখানে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। মুহুর্তের মধ্যেই হাজার হাজার শিক্ষার্থী একত্র হয়ে ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে, সায়েন্সের তিন হল ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল ও অমর একুশে হলের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা "লেজুড়বৃত্তির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না"; "আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ"; "স্টুডেন্ট পলিটিক্স, নো মোর নো মোর" ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা গত ১৭ জুলাই ছাত্রলীগকে হল থেকে বের করে দিয়ে দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমরা সেদিনই হলের প্রভোস্টের কাছে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ব্যাপারে নিশ্চয়তা নিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা দেখছি, ফের আমাদের হলে রাজনীতি ঢোকানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আমরা এ ধরনের কোনো অপচেষ্টা মেনে নেবো না। আমরা আবার গণরুম, গেস্টরুম চাই না। কোনো ধরনের শিক্ষার্থী নির্যাতনের রাজনীতির দিকে ফিরে যেতে চাই না।
তারা আরও বলেন, হলের বাইরে তথা ক্যাম্পাসে রাজনীতি থাকবে কি না সেটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সিনেট-সিন্ডিকেট। কিন্তু হলে ছাত্র রাজনীতি থাকবে না সেই বিষয়ে হলের শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত দিয়েছে। কিন্তু এখন আমরা আবারো দেখছি, হলের গেটে পোস্টার লাগানো হয়েছে। এমনভাবে লাগানো হয়েছে দেখে মনে হবে এটা কোনো পার্টি অফিস। নতুন কোনো একজন শিক্ষার্থী এসে বুঝতেই পারবে না এটা আবাসিক হল নাকি পার্টি অফিস। এগুলো হলে রাজনীতি পুনরায় প্রবেশের প্রাথমিক ধাপ বলে আমরা মনে করি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে রাজনীতির প্রেক্ষিতে বলেন ,
'ক্যাম্পাসে যারা রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের দাবি জানাতে নেমেছে ,আমার মতে তারা হয় শিবির কর্মী না হয় সমন্বয়কদের লোকজন। শিবির ক্যাম্পাস দখল করেছে। তাদের স্পেসিফিক রাজনৈতিক পরিচয় প্রয়োজন পড়ে না। তারা হাইলি অ্যাডাপ্ট্যাবল গোছের প্রাণী । কখনও ছাত্রলীগ, কখনও সচেতন সাধারণ শিক্ষার্থী , কখনও সমন্বয়ক, কখনও আবার কখনও তাওহীদী মুসলিম শিক্ষার্থী হিসেবে রূপ ধারণ করতে পারে। শিবির সাংগঠনিক ও জিহাদী আদর্শে কারণে ক্যাম্প্যাসে বেশি দিন সুবিধা করতে পারবে বলে মনে হয় না। আর সমন্বয়করা যদি ক্যাম্পাসে বিরাজনীতিকরণ চায় তবে দ্রুততর সময়ের মধ্যে তারা ডাকসু নির্বাচন করিয়ে নিজেরা ডাকসুর ভিপি জিএস সহ অন্যান্য পদগুলোতে জিতে ক্যাম্পাসে বৈধ মোড়ল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।'