ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন লবণ চাষী
পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কক্সবাজারের পেকুয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছে এক লবণ চাষী পরিবার। উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের টেকঘোনা পাড়া এলাকার লবণ চাষী ছৈয়দ মিয়ার দাবী স্থানীয় চিহ্নিত একটি সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি চক্রের হাতে হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। যেকোন সময় আবার হামলা করতে পারে তাঁরা পারে তাঁরা। এতে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ছৈয়দ মিয়ার পরিবার। শনিবার বিকেলে পেকুয়ার চৌমুহনীর সাংবাদিক অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানায় পরিবারটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছৈয়দ মিয়ার ছেলে মো. আজম। তিনি বলেন, গত ৪ মার্চ টেকঘোনা পাড়া এলাকার আলমের দোকানের সামনে হামলার শিকার হন আমার বাবা। এলাকায় মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় বাবার উপর হামলা করেন স্থানীয় মৃত নাছিরের ছেলে শাহাদাত ও রফিকের ছেলে মানিকসহ ৪/৫ জনের একটি বখাটের দল। এই বখাটের দলকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন স্থানীয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের ছেলে মো. ফোরকান। সেদিন সন্ধ্যায় এ হামলার ঘটনায় আমার পিতা ছৈয়দ মিয়া বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। এতে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে তাঁরা। পরের দিন ৫ মার্চ ফোরকানের নেতৃত্বে তাঁর ভাই এরফান, এমরান, মিন্টু ও স্থানীয় শাহাদাত-মানিকসহ ১৫-২০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র দা, কিরিচ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের বসতভিটায় হামলা করে। আমরা গেইটের দরজা বন্ধ করে ঘরের ভেতরে অবস্থান করছিলাম। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ আনার পর তাঁরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
সংবাদ সম্মলনে তিনি আরও বলেন, আমার থানায় বাবা এজাহার দেওয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার পাঁয়তারা করছে ফোরকান। ৬ মার্চ রাতে তাঁর গোয়ালঘর থেকে ১০টি গরু চুরির নাটক সাজিয়েছে। সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে তা সংবাদ আকারেও প্রকাশ করেছে সে। আপনারা সাংবাদিকেরা খবর নিয়ে দেখেন তাঁর ১০টি গরু ছিলো কিনা। তাঁর একটি গরু ছিলো তা গত শবে বরাতের দিন জবেহ করে তাঁর মেয়ের আকিকা দিয়েছেন। যা এলাকার সবাই জানে।
সংবাদ সম্মেলনে ছৈয়দ মিয়া বলেন, আমার উপর হামলার বিচার চাইতে এজাহার জমা দেওয়ায় প্রতিমুহুর্তে আমাদের হুমকির উপরে রেখেছে ফোরকান ও তাঁর অনুসারীরা। তাঁদের ভয়ে আমার পরিবারের সদস্যরা আজ ঘরছাড়া। ৪ তারিখ এজাহার জমা দিলেও এখনো কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি থানা প্রশাসন। আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনকে জানাতে চাই ফোরকান ওই এলাকায় কিশোর ছেলেদের হাতে মাদক তুলে দিয়ে তাঁদের নষ্ট করতেছে। গড়ে তুলেছে একটি অপরাধচক্র। সেসব কিশোর গ্যাংয়ের বেপরোয়া ছেলে গুলো যেকোন সময় আমার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা করতে পারে। আমি ও আমার পরিবার এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত থেকে বাঁচতে চায়। তাই এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এব্যাপারে পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পরিক্ষিত দেবনাথ বলেন, ৪ মার্চ ছৈয়দ মিয়ার উপর হামলার ঘটনায় থানায় দেওয়া অভিযোগটি আমি তদন্ত করতেছি। আমি ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তদন্ত শেষ করেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।