বিয়ে করার জন আল্লাহর আদেশ পেয়েছি, বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে নেশাখোরের উত্ত্যক্ত
বাংলাদেশ- কুয়েত মৈত্রী হল সংলগ্ন সমাজকল্যাণ ক্যাফেটেরিয়ায় আজ আনুমানিক রাত সাড়ে নয়টায় এই ছেলেটি ঢুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর হাত আচমকা ধরে এবং বলতে থাকে যে সে (ছাত্রী) এত রাতে বাইরে কী করছে এবং তার সাথে যেতে বলে। সে নাকি আল্লাহ্ তায়ালা থেকে হুকুমপ্রাপ্ত এবং সেও রাজি আছে, এখন তাকে বিয়ে করতে হবে। উল্লেখ্য, হলের দুয়েকজন এই ছেলেকে দুপুর থেকে নাকি সামনের চত্বরে হাঁটাহাঁটি করতে দেখেছেন।
তখন মেয়েটির সাথে থাকা একই বিভাগের সিনিয়র আপু এবং সহপাঠী বন্ধুরা ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করে, এটা কি প্র্যাংক বা কোন র্যাগ বা ডেয়ার গেম কিনা।
ছেলেটা তখনও ধর্মীয় কথাবার্তা বলে আর না গেলে মারমুখী ভঙ্গিতে এগিয়ে আসে। তখন আশপাশের সবাই ধরে মারতে মারতে তাকে মৈত্রী হলের গেস্টরুম-গেটের সামনে নিয়ে আসে।
তখন প্রক্টর অফিস, সংশ্লিষ্ট বিভাগের সিনিয়র ভাইদের ও নিউমার্কেট থানায় ফোন দেওয়া হয়। তাকে কান ধরতে বললে না ধরে বেয়াদবি করতে থাকলে তাকে মারা হয়। তারপর সে একনাগাড়ে ধর্মীয় কথাবার্তা, "ঈমান আছে", "আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান" এসব বলা শুরু করে।
ইতোমধ্যে নিউমার্কেট থানার দুজন কনস্টেবল এসে তাকে জনরোষের হাত থেকে সরালেও সে একইরকম করতে থাকে। তারপর প্রক্টরের গাড়ি আসলে হল প্রভোস্ট ম্যামের অনুমতিতে ভিক্টিম ছাত্রী, সাহায্যকারী আপা ও আরো সচেতন ছেলেমেয়েকে নিয়ে নিউমার্কেট থানায় আনা হয়।
এখানোও অপরাধী একইরকম কথা বলে। তার বাবার নাম মুসলিম জাতির পিতা, শ্রদ্ধেয় নবী হজরত মুহাম্মদ ইব্রাহীম (আ.) এর নাম বলেন। অপ্রকৃতস্থের মত হাসাহাসি আর কফ ফেলতে থাকে। এতে ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে শেষে বাধ্য হয়ে তাকে ওসি সাহেব এর রুমে নিয়ে ইন্টারোগেশন করতে নেওয়া হয়।
শেষ পর্যন্ত জানা গেছে, তার নাম মোহাম্মদ অনিক, সে ঢাকা কলেজে পড়ে, হোস্টেলে থাকে। বোনের বাড়ি রংপুর। বোনকেও নাকি সকালে ফোন করে নামাজ পড়তে বলেছে।
ওসি স্যারের কথায় সে বন্ধুর নাম্বার দেয়। তারপর তার বন্ধুরা থানায় এসেছে তাকে ছাড়াতে। তাদের থেকে জানা যায়, সে ঢাকা কলেজের ছাত্র, ভর্তি পরীক্ষার্থী। মেডিকেলের পরীক্ষা খারাপ হবার পর থেকে তার আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। কালকের খ ইউনিটের পরীক্ষার পর তা তীব্র হয়।
সন্ধ্যায় সে হোস্টেল থেকে নামাজ পড়তে যাবার কথা বলে বের হয়ে যায়। তারপর থেকে তারাও তাকে আজিমপুরের কাছাকাছি সব মসজিদে খুঁজে দেখেছে। কিন্তু তারাও অবাক বন্ধুর এমন পরিণতি দেখে।
উল্লেখ্য যে ভিক্টিম ছাত্রী টিউশন করিয়ে নিজের হাতখরচ সামলায়। তিনি এখন দারুণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপা নামে এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন -"অনেকে বলতেছেন ছেলেটা মানসিক রোগী ওকে নিয়ে মজা না নিতে। এই কথা আপনার কিভাবে বলতেছেন আমি বুঝতেছি না। কই ওতো কোন ভাইয়ের হাত ধরে বলে নাই চল বিয়ে করি। কয়েক দিন আগে এক আপু পোস্ট করলো এক পাগল তাকে মারতে আসছিল। তার সাথে সাথে রিকশায় ও উঠে গেছে। কই কোন ভাইকে তো মারতে আসে নাই।১৫ দিন আগে আমি টিউশন থেকে আসতেছি, রাত তখন ৯ টা বাজে। ঢাবির সেন্ট্রাল মসজিদের সামনে এক নেশাখোর তেড়ে এসে বলতেছে। এতো জামা কাপড় গায়ে দিছিস কেন, ভো** দেখাবি না। কই ক্যাম্পাসের কোন ভাইকে তো একথা বলে না। আরও কয়েক বার এই নেশাখোর পাগলের গাল -মন্দ শুনছি নিজ ক্যাম্পাসে।সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকি। ক্যাম্পাসে এমন অনেক মেয়ে আছে এদের দ্বারা হেনস্তা হয়েছে। কই কোন ভাই তো সিমপ্যাথি দেখাতে আসে নাই। আসলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মেয়েরা সবসময় অসহায় "