দেশের রাজনীতিতে যেন আতঙ্কের দিন হয়ে উঠেছে ২৮ অক্টোবর। ১৭ বছর আগে এই দিনে ঢাকায় বড় দলগুলোর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল সারাদেশে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও আলোচনায় এসেছে ২৮ অক্টোবর। কারণ ওইদিন বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। একইদিন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দিয়ে ঢাকা দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে রাজনীতিতে দীর্ঘসময় ধরে কোনঠাসা হয়ে থাকা জামায়াতও সেদিন বড় জমায়েতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোও মাঠে থাকবে। আর সব দলই নিজেদের ঘোষিত স্থানে সমাবেশ করতে অনড় অবস্থানে রয়েছে। পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে নয়াপল্টনে বিএনপি, বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগ এবং মতিঝিলের শাপলা চত্তরে জামায়াতে ইসলামী সমাবেশ করার চূড়ান্ত ঘোষণা দিয়েছে। একইদিন ঢাকা শহরে সব দলের কর্মসূচি দেওয়ায় দিনটিকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। কী হবে সেদিন তা নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কাজ করছে নগরবাসীর মধ্যে। সেদিন বড় ধরণের সংঘাতের আশঙ্কা করছে খোদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। তবে দিনটিতে যেন বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য ঢাকায় নিরাপত্তা বলয় তৈরির নানা ছক কষছে বিভিন্ন বাহিনী। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের পরামর্শ নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের যখন বাংলাদেশের কড়া নজর তখন সংঘাত এড়ানো সম্ভব না হলে তা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি ও মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জামায়াত সমাবেশের ডাক দিয়েছে। অন্যদিকে ওইদিন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। এছাড়াও পুরো ঢাকায় ছড়িয়ে থাকবেন তাদের নেতাকর্মীরা। এরইমধ্যে বিএনপি বলেছে স্মরণকালের সেরা উপস্থিতির মধ্য দিয়ে মহাসমাবেশ করতে চায় তারা। তবে নয়াপল্টনে দলটি অনুমতি পাবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। অন্য কোথাও পাঠাতে চাইলেও বিএনপি যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে ঢাকায় দশ লাখ নেতাকর্মীকে কর্মসূচিতে উপস্থিত করার কথা বলছে আওয়ামী লীগ। আর একইদিনে সমাবেশের অনুমতি না পেলেও মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াত। এদিন বিএনপির সঙ্গে যুগপথ আন্দোলনে থাকা ৩৬টির মতো দলও মাঠে থাকবে।সার্বিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে দফায় দফায় বৈঠক করণীয় নির্ধারণ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও। আপাতত ছুটিও বাতিল করা হয়েছে সদস্যদের।
জানা গেছে, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে বিএনপি, ঢাকা মহানগর ও দলের অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা। এছাড়া দেশের সব সাংগঠনিক বিভাগ, মহানগর ও জেলা ও উপজেলার পর্যায়েও হচ্ছে প্রস্তুতি সভা। এছাড়াও সাধারণ জনগণের সম্পৃক্ততাও বাড়াতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন নেতাকর্মীরা। ২৮ অক্টোবর ঘিরে বসে নেই আওয়ামী লীগও। ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি। আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগিতা, ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঢাকাজুড়ে পাহারা দিতে বলছেন নেতারা। অন্যদিকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তারাও ২৮ অক্টোবর শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে অনড় বলে জানিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জামায়াত সমাবেশ করার অনুমতি পাবে না। অনুমতি ছাড়া মাঠে নামলে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় একটি সূত্র থেকে জানা যায়, ২৮ অক্টোবর প্রশাসন অনুমতি না দিলেও যেকোনো মূল্যে সমাবেশ করবে দলটি।
একইদিন সব দলের নেতাদের ঢাকা দখলে নেওয়ার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে জনমনে। বিশেষ করে রাজনীতির বাইরে থাকা নাগরিকদের উদ্বেগ যেন কয়েকগুন বেশি। ঢাকার মতিঝিলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়ে বলেন, ২৮ তারিখ ছুটি নেব কিনা ভাবতেছি। সবাই মাঠে নামলে ঢাকা শহর অচল হয়ে যাবে। আর মারামারি শুরু হলে কে বাঁচে, কে মরে তা কেউ জানে না। পরিবারের লোকজনও টেনশনে আছে।
২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিকে ঘিরে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন স্বাভাবিক থাকে সেজন্য প্রশাসনকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মহাসমাবেশ ঘিরে রাজধানী ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। চালানো হচ্ছে নিরাপত্তা তল্লাশি। এছাড়াও সন্দেহজনক বাসা বাড়ি, হোটেলও তল্লাশি চালানো হবে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিপুল পুলিশ সদস্য মোতায়েন করার পরিকল্পনা আছে বলেও জানা গেছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও কড়া পাহারায় থাকবে।
রাজনীতির মাঠে এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও এতদিন পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত ছিল। কথার লড়াই চললেও রাজপথ তুলনামূলক ভালো ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরকে ঘিরে যে উত্তপ্ত হওয়ার আভাস মিলছে সেখান থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে সরে আসতে হবে। খোলা মন নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসা জরুরি।
নয়াপল্টনেই বিএনপির মহাসমাবেশ, অন্য কোথাও সম্ভব নয়
২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই মহাসমাবেশ আয়োজনে অনড় অবস্থানের কথা পুলিশকে জানিয়েছে বিএনপি। সমাবেশের জন্য বিএনপির কাছে সাতটি তথ্য জানতে চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বুধবার রাতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবর একটি চিঠি পাঠায়।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন মিয়ার পাঠানো এই চিঠিতে সমাবেশের জন্য নির্ধারিত স্থান নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিকল্প আরও দুটি ভেন্যুর নাম প্রস্তাবের অনুরোধসহ আরও কিছু তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এই চিঠির উত্তরে বৃহস্পতিবার দুপুরে রুহুল কবির রিজভী পল্টন থানার ওসির কাছে একটি চিঠি পাঠান যাতে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনেই আয়োজনের সকল প্রস্ততি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। অন্য কোনো ভেন্যুতে যাওয়া সম্ভব হবে না।
চিঠিতে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ সম্পর্কিত যেসব তথ্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো- সমাবেশ বেলা ২টায় শুরু হয়ে মাগরিবের আজানের আগে শেষ হবে, সমাবেশে এক লাখ থেকে সোয়া লাখ লোক হতে পারে, সমাবেশটি পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় ও পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত বিস্তুৃত হতে পারে, সমাবেশে পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় এবং পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত কিছুদূর অন্তর অন্তর মাইক লাগানো হবে, ২৮ অক্টোবর সমাবেশে বিএনপির নেতারা ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন না, সমাবেশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দলের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন যার সংখ্যা ৫০০ জন।
বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটেই সমাবেশ করবে আ. লীগ
আগামী ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ আওয়ামী লীগ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটেই করতে চায় বলে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাতে (ওসি) দেওয়া চিঠিতে জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের সই করা চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবর শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি (মঞ্চ নির্মাণ ও প্রচার প্রচারণার-কার্যক্রম) ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এই অবস্থায় স্বল্প সময়ের মধ্যে অন্য কোনো ভেন্যুতে নতুনভাবে সমাবেশের প্রস্তুতি গ্রহণ করা দুরূহ ব্যাপার। তাই উপর্যুক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের অনুষ্ঠানস্থল ও তার সংলগ্ন এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা দেওয়ার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
শাপলা চত্বরেই মহাসমাবেশ করবে জামায়াত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আগামীকাল ২৮ অক্টোবর মতিঝিল শাপলা চত্বরেই মহাসমাবেশ করবে জামায়াত। আর এই মহাসমাবেশ সফলে প্রশাসন এবং দেশবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা জানান। তিনি বলেন, কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও আলেম-উলামার মুক্তি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ২৮ অক্টোবর মতিঝিল শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করবে জামায়াত।
ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, জামায়াতে ইসলামী তার সাংবিধানিক অধিকার অনযায়ী আগামী ২৮ অক্টোবর শনিবার রাজধানী ঢাকা মহানগরীর শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে সহায়তা চেয়ে পুলিশ কমিশনারের নিকট লিখিতভাবে অবহিত করেছে। পক্ষপাতদুষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছে, ‘জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।’ পুলিশের দায়িত্ব হল শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা, বাধা দেওয়া নয়। তার এই বক্তব্য অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক, এখতিয়ারবহির্ভূত ও বেআইনি। পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মুজিবুর রহমান বলেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আমরা আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের কর্মসূচি ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছি। শান্তিপূর্ণ এই মহাসমাবেশে সুশৃঙ্খলভাবে সমবেত হয়ে এক দফা দাবি কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়নের আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এবং সরকারের কোনো ধরনের উসকানি, অসাংবিধানিক ও গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আমরা দেশবাসী এবং সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
রাস্তায় কোন সমাবেশের অনুমতি দেবে না ডিএমপি: যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব
পুলিশ কোনো রাজনৈতিক দলকে রাস্তায় কর্মসূচি পালন করতে দেবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার। তিনি বলেন, রাস্তায় কোনো সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। মাঠ কিংবা খোলা স্থান নির্বাচন করে, সেটি উল্লেখ করে আবেদন করতে হবে। বৃহস্পতিবার ডিএমপি সদর দপ্তরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার এসব কথা বলেন।
বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ক্ষমতাসীন দলকে (আওয়ামী লীগ) সমাবেশের বিকল্প ভেন্যুর (স্থান) কথা বলা হয়েছে। বিএনপিকেও কি এমন কোনো চিঠি দেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বলেন, সব রাজনৈতিক দলকে, অর্থাৎ যারা সভা-সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে, তাদের বলা হয়েছে জনদুর্ভোগ কমাতে রাস্তা বাদ দিয়ে খোলা স্থান দেখতে। সেটা খোলা মাঠ হতে পারে। সবাইকে বলা হয়েছে, নিজেরটা নিজেরাই পছন্দ করে ডিএমপিকে জানান।
বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, আমাদের ঢাকা শহর মেগা সিটি (বড় শহর)। এখানে যদি লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়, তাহলে ঢাকার বাসিন্দা যারা আছে, দুই-আড়াই কোটি নগরবাসীর জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিতে সমস্যা হয়। সব দিক বিবেচনা করেই নগরবাসীর স্বার্থে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ডিএমপি কমিশনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সমাবেশ করতে চাওয়া দলগুলোকে রাস্তা বাদ দিয়ে ভিন্ন স্থানে সমাবেশ করতে বলা হয়েছে। বিকল্প স্থান ঠিক করে আবেদন করলে কমিশনার চিন্তা করে দেখবেন, তারা অনুমতি পাবে কি না।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমি আশা করছি, রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে রাস্তা বাদ দিয়ে খোলা স্থানে সমাবেশ করার কথা ভাববে। বিএনপি পল্টনেই সমাবেশ করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে ডিএমপি কী করবে, এমন প্রশ্নে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতারা কর্মীদের চাঙা রাখার উদ্দেশ্যে অনেক সময় অনেক কিছুই বলেন। আমরা সেটিকে বিচার-বিবেচনায় নিচ্ছি না। আইনে কী আছে, আমরা সেটা বিবেচনা করব। ডিএমপির যে অর্ডিন্যান্স আছে, সেখানে বলা আছে, ঢাকা শহরে কোনো সভা-সমাবেশ করতে হলে অবশ্যই কমিশনারের অনুমতি নিতে হবে। কেউ যদি অনুমতি না নেয়, সেটি আইন অমান্য হবে। তবে আমি আশা করব, রাজনৈতিক দলগুলো আইনের প্রতি বাধ্য থেকে পুলিশের প্রতি সহযোগিতা করবে। আমরাও সবাইকে সহযোগিতা করতে চাই।